অমর্ত্য সেনের জন্ম ১৯৩৩ সালের ৩ নভেম্বর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শান্তি নিকেতনে। অমর্ত্য সেনের পরিবারের নিবাস ছিল পুরান ঢাকার ওয়ারীতে। কৈশোরে কিছুকাল ঢাকায় থেকেছেন তিনি। এখানেই তিনি সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার ভয়াবহ অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। বাংলার সংস্কৃতি, জীবন, মানুষ, অভাব, দুর্ভিক্ষ অমর্ত্য সেনের পরবর্তী কর্মকাফ্ফে বিশেষ ভহৃমিকা পালন করেছে। নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন একাধারে দার্শনিক, ইতিহাসবিদ, সমাজতাত্ত্বিক হিসেবেও খ্যাত। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি ও দর্শনের অধ্যাপক তিনি। কয়েক বছর আগে পৃথিবীর প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয় নালন্দা পুনর্গঠনের কাজ হাতে নিয়েছেন তিনি। শত ব্যস্ততার মধ্যেও ইতিহাসের দায় থেকে নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন। ১৯৯৮ সালে নোবেল বিজয়ী এ অর্থনীতিবিদের কাছে নালন্দা জ্ঞান ও প্রজ্ঞার প্রেরণা। বৌদ্ধ ধর্মের অন্যতম কেন্দ্র নালন্দা পুনর্গঠনে ভারত, চীন, সিঙ্গাপুর, জাপান, থাইল্যান্ডসহ কয়েকটি এশীয় দেশ সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। নালন্দা ভারতের বিহারে অবস্থিত। অতীতে বৌদ্ধ মতবাদ শিক্ষা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জ্যোতির্বিদ্যা, রাজনীতি, ওষুধশাস্ত্র এবং শিল্পকলা বিষয়ে পাঠ দেওয়া হতো। ১১৯৭ সালে ধ্বংসের আগে এ আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশ্বেরর নানা প্রান্ত থেকে আসা ১০ হাজার শিক্ষার্থী পাঠ গ্রহণ করেন। নালন্দা পুনর্গঠন নিয়ে এশিয়া সোসাইটি পত্রিকায় ড. সেনের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন শ্রেয়া সিনহা। সাক্ষাৎকারটি সমকালের পাঠকদের জন্য ভাষান্তর করা হলো। ভাষান্তর : মাহবুব মোর্শেদ
প্রাচীন নালন্দা ছিল পুরোপুরি বিদ্যার অনুধ্যানে নিয়োজিত একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। শিক্ষাক্ষেত্রে ব্যুৎপত্তি অর্জনের জন্য নিবেদিত। শিক্ষাক্ষেত্রে ব্যুৎপত্তি অর্জন ও তা রক্ষার এমন এক ঐতিহ্য নালন্দা তৈরি করেছিল যে চীন, জাপান, কোরিয়া ও পৃথিবীর অন্যান্য স্থান থেকে এখানে শিক্ষার্থীরা আসতে উদ্বুদ্ধ হতেন। শুরুতে বৌদ্ধ শিক্ষাকেন্দ্র হিসেবে এটি চালু হলেও নালন্দা শিক্ষা কার্যক্রম শুধু বৌদ্ধ মতবাদে আবদ্ধ ছিল না। সেক্যুলার বিষয়, যেমন স্বাস্থ্য সুরক্ষা, ভাষাতত্ত্ব, জ্যোতির্বিদ্যা ইত্যাদি ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়টির সুখ্যাতি ছিল। নালন্দা গুপ্তদের মতো হিন্দু রাজাদের আনুকূল্য পেয়েছে, বাংলার বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী পাল রাজারাও বিশ্ববিদ্যালয়টিকে সহায়তা দিয়েছেন। কোনো অর্থেই এটি বৌদ্ধ ধর্মকেন্দ্রিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছিল না, বরং এটি জ্ঞান ও অনুধাবনের ক্ষেত্রে বৌদ্ধ ঐতিহ্য ধারণ করে মানবিক অশান্তি থেকে মুক্তির পথ খুঁজত। একই সঙ্গে এটি ছিল আধুনিক প্রতিষ্ঠান। নালন্দা সে সময়ে অবশ্যই আধুনিক ছিল। ধর্মের বাইরের বিষয়, যেমন জ্যোতির্বিদ্যা। মানুষের কাজে লাগে এমন বিদ্যা শিক্ষা দেওয়া হতো, যেমন স্বাস্থ্যসেবা।
নালন্দার ভবিষ্যৎ বিষয়ে আপনার ভাবনা কী?
এ বিশ্ববিদ্যালয় মানবজাতির সামনে যে রূপকল্প হাজির করেছিল তা ছোটবেলায় প্রথম নালন্দা দেখার দিন থেকেই আমার মধ্যে আত্মস্থ হয়ে গিয়েছিল। একদিন এ মহান বিশ্ববিদ্যালয়কে পুনর্জীবন দেওয়ার স্বপ্ন আমি লালন করতাম। কৈশোরে আমি বারবার নালন্দায় গিয়েছি, প্রতিবারই ভারতীয় সভ্যতার কেন্দ্র বিহারে অবস্থিত এ উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি আমাকে আচ্ছন্ন করেছে। যখন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নিতীশ কুমার প্রস্তাব দিলেন আমি তার স্বপ্নের সঙ্গে আমার আকাঙ্ক্ষার মিল দেখে খুব আশ্বস্ত হয়েছিলাম। তারা চেয়েছিলেন পুরনো বিশ্ববিদ্যালয়টির পাশে নতুন একটি বিশ্ববিদ্যালয় হোক। আমি সেই আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন দেখতে চাই_ অন্তত এর সূচনা দেখতে চাই। সত্য হলো, বিহার অমোচনীয় দারিদ্র্যসহ প্রচণ্ড অর্থনৈতিক সংকটে পতিত। এ অবস্থায় নতুন নালন্দা তাদের জন্য অনেক বেশি প্রয়োজনীয়। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে যদি তথ্যপ্রযুক্তি, পরিবেশবিদ্যা, ব্যবস্থাপনার মতো কার্যকর শিল্পগুলো শেখানো হয় তবে তা তাদের কাজে আসবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর বেছে নেওয়া হয়েছে কীভাবে? কোন ধরনের শিক্ষাগত যোগ্যতা আপনারা চাচ্ছিলেন?
পূর্ব এশিয়া সম্মেলনের সদস্য দেশগুলোর জন্য ভাইস-চ্যান্সেলর পদটি উন্মুক্ত থাকার কথা। তারপরও মেন্টর গ্রুপ প্রথম ভাইস-চ্যান্সেলর হিসেবে একজন ভারতীয়কেই প্রাধান্য দিয়েছে, যার কাজ করার ও প্রকল্পটিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বাস্তব অভিজ্ঞতা আছে। মেন্টর গ্রুপের পক্ষ থেকে সিলেকশন কমিটির কাছে যে চারটি চাওয়া ছিল তা হলো_ ১. প্রাতিষ্ঠানিক যোগ্যতা ২. প্রশাসনিক সক্ষমতা ৩. নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় প্রকল্প বিষয়ে আগ্রহ ও দায়বোধ ৪. নালন্দায় নতুন ক্যাম্পাসে অবস্থান ও এখানে একটি বুদ্ধিবৃত্তিক সমাজ গঠনের প্রত্যয় এবং বিহারের সমস্যা ও সম্ভাবনার সঙ্গে প্রত্যক্ষ যোগাযোগ।
সিলেকশন কমিটির সদস্যরা অন্তত ২০ জনের সঙ্গে কথা বলেছেন। পরামর্শ মোতাবেক সত্যিই যখন বিশ্ববিদ্যালয়টি কাজ শুরু করবে, তখন নালন্দায় থাকার সম্ভাব্যতা নিয়ে খোঁজখবর নিয়েছেন। সময়ে সময়ে যে কোনোভাবেই হোক ভারতীয় পত্রপত্রিকায় এ নিয়ে নানা খবর বেরিয়েছে। আবাসিক ভাইস-চ্যান্সেলরের বিষয়টি নিয়ে ধোঁয়াশা থাকলেও পত্রিকাগুলো নানাজনের কাছে অফার পেঁৗছানোর খবর দিয়েছে। সব তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে কমিটি ড. গোপা সাবহারওয়ালকে নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একই সঙ্গে নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে এমন তিন ব্যক্তির নাম ভারত সরকারের কাছে পাঠিয়েছে। ড. সাবহারওয়ালের প্রাতিষ্ঠানিক যোগ্যতা অসাধারণ, প্রাতিষ্ঠানিক বিষয়ে আমাদের পরামর্শক ছিলেন বিশ্ববিখ্যাত সমাজতাত্তি্বক আন্দ্রে বেতেই। তার প্রশাসনিক যোগ্যতাও সুগভীর। তিনি নালন্দা প্রকল্পের প্রতি দায়বদ্ধ। তিনি বিহারের সঙ্গে জড়িত। নালন্দায় অবস্থানের ব্যাপারে তার আগ্রহ অন্যদের থেকে তাকে এগিয়ে দিয়েছে। ভাইস-চ্যান্সেলর নির্বাচনে ক্ষমতার অধিকারী নালন্দা মেন্টর গ্রুপ ড. সাবহারওয়ালসহ তিনজনের নাম সরকারের কাছে প্রস্তাব করেছে। সরকার ওই পদের জন্য মনোনীত করে ড. সাবহারওয়ালকে প্রস্তাব পাঠিয়েছে। মেন্টর গ্রুপ খুশি যে প্রস্তাব পাওয়ার পর তিনি তা গ্রহণ করেছেন।
আমি বুঝতে পেরেছি, কিছু গণমাধ্যমে এ প্রশ্ন উঠেছে যে যিনি পূর্ণ অধ্যাপক নন তিনি কীভাবে ভাইস-চ্যান্সেলর পদের জন্য নির্বাচিত হন। আমার মনে হয়, পদ ও মর্যাদার দ্বারা আচ্ছন্ন সমাজে কিছু মানুষ ব্যক্তিকে তার পদ ও সামাজিক অবস্থান দিয়েই বিচার করতে চান_ তার যোগ্যতা ও গুণ দিয়ে নয়।
ড. গোপা সাবহারওয়াল কি কাজ শুরু করেছেন? বৃহৎ এই প্রকল্প বাস্তবায়িত করতে তিনি কী উদ্যোগ নিচ্ছেন?
বিহার সরকারের সহায়তায় ড. সাবহারওয়াল ইতিমধ্যে একটি ক্যাম্পাস স্থাপন করেছেন। আইনগত, প্রশাসনিক ও প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থাপনার পরিকল্পনাও এগিয়ে নিচ্ছেন। প্রথম দুটি বিভাগ হবে পরিবেশবিদ্যা ও ইতিহাসবিদ্যাকেন্দ্রিক, এরপরই হবে তথ্যপ্রযুক্তি ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ। এই বিভাগগুলো চালুর কাজ ইতিমধ্যে অনেক এগিয়েছে। তার নেতৃত্বে সিঙ্গাপুরের নালন্দা-শ্রীবিজয় সেন্টার, থাইল্যান্ডের চুলালঙকর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে পারস্পরিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়েছে। প্রফেসর ওয়াঙ বাঙওয়েই-এর মাধ্যমে চীনের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ইনফরমাল সম্পর্কও স্থাপিত হয়েছে। প্রফেসর ওয়াঙ নালন্দা পরিকল্পনার সঙ্গে জড়িত, মেন্টর গ্রুপের অন্যতম সক্রিয় সদস্য। কোরিয়া, জাপান ও আমেরিকার নেতৃস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গেও পারস্পরিক অংশীদারিত্বমূলক সহযোগিতার পথ খুলবে। এই সম্ভাবনাগুলোর অনুসন্ধান এখনও চলছে। বিহার সরকার বিশ্ববিদ্যালয়কে যে জমি দিয়েছে তা দেখভাল করার সঙ্গে সঙ্গে ক্যাম্পাস ও ভবনের স্থাপত্য-পরিকল্পনা এখন জোরেশোরে শুরু হয়েছে।
দুর্ভাগ্যজনকভাবে ড. সাবহারওয়াল এখনও প্রকৃত ভাইস-চ্যান্সেলর না হয়ে মনোনীত ভাইস-চ্যান্সেলর রয়ে গেছেন। এর পেছনে ভারত সরকারের প্রশাসনিক দীর্ঘসূত্রতাই দায়ী। এটি না হলে তিনি আরও দক্ষতার সঙ্গে তার দায়িত্ব পালন করতে পারতেন। নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় বোর্ড আশা করে শিগগির এই দীর্ঘসূত্রতার অবসান ঘটবে। তাতে কাজে গতি আসবে। মেন্টর গ্রুপের পরামর্শ মোতাবেক গত নভেম্বরে নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাস হয়েছে।
অর্থনৈতিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়টির লাভজনক হওয়ার সম্ভাবনা কতটুকু?
এ মুহূর্তে পরিকল্পনা কমিশনের মাধ্যমে ভারত সরকারই সব ব্যয়ভার বহন করছে। সরকার প্রশাসনিক জটিলতাগুলো দূর করার চেষ্টাও করছে। বাইরে থেকে অনুদানের প্রতিশ্রুতি আছে। চীন, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, লাওসসহ বিভিন্ন দেশের সরকার ও বেসরকারি খাত থেকে সহায়তা মিলবে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনৈতিক ভিত্তি তৈরি করতে আরও বহু পথ পাড়ি দিতে হবে।
বৈশ্বিকভাবে উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রে নালন্দার ভূমিকা কী হবে?
আন্তঃএশীয় সহযোগিতা ও জ্ঞান অর্জনে পুরাতন নালন্দার একটি বিশেষ ভূমিকা ছিল। এখানকার শিক্ষা কার্যক্রম ও গবেষণা শুধু ধর্মশিক্ষার সঙ্গেই জড়িত ছিল না, ব্যবহারিক জ্ঞান ও প্রায়োগিক বিজ্ঞানের সঙ্গেও এর সম্পর্ক ছিল। সে সময়কার শিল্পবোধের প্রতিফলন ছিল এর কার্যক্রমে। নতুন নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় একই দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সাম্প্রতিক শিক্ষাঙ্গন হিসেবে গড়ে উঠবে। আজকের সাম্প্রতিক বিষয় পরিবেশ সমস্যা ও তথ্যপ্রযুক্তি। এই ক্ষেত্রগুলোতে আন্তঃএশীয় সহযোগিতার প্রয়োজন রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে বিষয়গুলোতে সহযোগিতা বাড়বে। বিশ্বের বুদ্ধিবৃত্তিক ক্ষেত্রে পশ্চিমা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিশেষ অবদান আছে, বৈশ্বিক জ্ঞানক্ষেত্র তৈরিতে তারা বিশেষ ভূমিকা রেখেছে। কিন্তু মনে রাখার মতো বিষয় হলো, পশ্চিমের প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হওয়ার ৭শ' বছর আগে নালন্দা স্থাপিত হয়েছিল। এটি ছিল ইউরোপের বোলঙনা বিশ্ববিদ্যালয়। নালন্দা তখনই এটি পুরো এশিয়ার মধ্যে একটি যোগাযোগ ব্যবস্থা তৈরি করতে পেরেছিল। প্রাতিষ্ঠানিক যোগ্যতা অর্জনের সঙ্গে সঙ্গে একই ধরনের যোগাযোগ নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রেও হবে।
বিহারের জন্য এ বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্ব কী?
প্রায় এক হাজার বছর ধরে বিহার ছিল ভারতীয় সভ্যতার কেন্দ্র। এটি পাটনা বা পাটালিপুত্র থেকে শুরু হয়েছিল। এখানেই প্রথম সর্বভারতীয় সাম্রাজ্যের কেন্দ্র স্থাপিত হয়েছিল। বিহারেই প্রথম বৌদ্ধ পণ্ডিতদের সভায় নাগরিক আলোচনার মধ্য দিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের বিরল উদাহরণ তৈরি হয়েছিল। নাগরিক আলোচনাই গণতন্ত্রচর্চার কেন্দ্রীয় বিষয়। বিহারেই প্রথম জনস্বাস্থ্য সেবার ব্যবস্থা স্থাপিত হয়েছিল। যা নালন্দা পড়তে এসে ফা হিয়েন ও ইৎ সিঙ আমাদের জানিয়েছিলেন। পাটালিপুত্রের কুসুমপুরেই আদি ভারতীয় গণিতচর্চার শুরু হয়েছিল। বিহার আধুনিক ইতিহাসে পশ্চাৎপদ একটি জনপদ হিসেবে চিহ্নিত হতে পারে, কিন্তু এর রয়েছে উজ্জ্বল ইতিহাস। ইতিহাস এখানকার শিক্ষা কার্যক্রমকে প্রণোদনা দিতে পারে এবং তা দ্রুতলয়ে ঘটছেও।
নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় প্রকল্প গ্রহণের আগে বিহার সরকারের দৃষ্টিভঙ্গিতেও এমন প্রণোদনার ভাবনা ছিল। নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় এর ভিত্তিভূমির পুনর্জাগরণের ব্যাপারে পুরোপুরি দায়বদ্ধ। নালন্দা বিশুদ্ধ একাডেমিক শিক্ষার দিকে ঝুঁকে থাকবে না। তথ্যপ্রযুক্তি ও পরিবেশবিদ্যার মতো ব্যবহারিক বিষয়ের মধ্য দিয়ে বিহারের মানুষের জীবনযাত্রার দিক পরিবর্তনের চেষ্টাও থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিস্তারের সঙ্গে যেমন নালন্দার নিরাপদ অর্থনৈতিক ভিত্তি তৈরি হবে, তেমনি আন্তঃএশীয় সহযোগিতার মাধ্যমে সর্বভারতীয় বিস্তারও ঘটবে বিশ্ববিদ্যালয়টির। বিহার নালন্দাকে সমর্থন দিয়েছে, প্রত্যুত্তরে আমরা চাই নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় বিহারকে সমর্থন জোগাবে।
প্রাচীন নালন্দায় অমর্ত্য ও সহযোগীরা
নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশিষ্টতা কী ছিল?প্রাচীন নালন্দা ছিল পুরোপুরি বিদ্যার অনুধ্যানে নিয়োজিত একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। শিক্ষাক্ষেত্রে ব্যুৎপত্তি অর্জনের জন্য নিবেদিত। শিক্ষাক্ষেত্রে ব্যুৎপত্তি অর্জন ও তা রক্ষার এমন এক ঐতিহ্য নালন্দা তৈরি করেছিল যে চীন, জাপান, কোরিয়া ও পৃথিবীর অন্যান্য স্থান থেকে এখানে শিক্ষার্থীরা আসতে উদ্বুদ্ধ হতেন। শুরুতে বৌদ্ধ শিক্ষাকেন্দ্র হিসেবে এটি চালু হলেও নালন্দা শিক্ষা কার্যক্রম শুধু বৌদ্ধ মতবাদে আবদ্ধ ছিল না। সেক্যুলার বিষয়, যেমন স্বাস্থ্য সুরক্ষা, ভাষাতত্ত্ব, জ্যোতির্বিদ্যা ইত্যাদি ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়টির সুখ্যাতি ছিল। নালন্দা গুপ্তদের মতো হিন্দু রাজাদের আনুকূল্য পেয়েছে, বাংলার বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী পাল রাজারাও বিশ্ববিদ্যালয়টিকে সহায়তা দিয়েছেন। কোনো অর্থেই এটি বৌদ্ধ ধর্মকেন্দ্রিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছিল না, বরং এটি জ্ঞান ও অনুধাবনের ক্ষেত্রে বৌদ্ধ ঐতিহ্য ধারণ করে মানবিক অশান্তি থেকে মুক্তির পথ খুঁজত। একই সঙ্গে এটি ছিল আধুনিক প্রতিষ্ঠান। নালন্দা সে সময়ে অবশ্যই আধুনিক ছিল। ধর্মের বাইরের বিষয়, যেমন জ্যোতির্বিদ্যা। মানুষের কাজে লাগে এমন বিদ্যা শিক্ষা দেওয়া হতো, যেমন স্বাস্থ্যসেবা।
নালন্দার ভবিষ্যৎ বিষয়ে আপনার ভাবনা কী?
এ বিশ্ববিদ্যালয় মানবজাতির সামনে যে রূপকল্প হাজির করেছিল তা ছোটবেলায় প্রথম নালন্দা দেখার দিন থেকেই আমার মধ্যে আত্মস্থ হয়ে গিয়েছিল। একদিন এ মহান বিশ্ববিদ্যালয়কে পুনর্জীবন দেওয়ার স্বপ্ন আমি লালন করতাম। কৈশোরে আমি বারবার নালন্দায় গিয়েছি, প্রতিবারই ভারতীয় সভ্যতার কেন্দ্র বিহারে অবস্থিত এ উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি আমাকে আচ্ছন্ন করেছে। যখন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নিতীশ কুমার প্রস্তাব দিলেন আমি তার স্বপ্নের সঙ্গে আমার আকাঙ্ক্ষার মিল দেখে খুব আশ্বস্ত হয়েছিলাম। তারা চেয়েছিলেন পুরনো বিশ্ববিদ্যালয়টির পাশে নতুন একটি বিশ্ববিদ্যালয় হোক। আমি সেই আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন দেখতে চাই_ অন্তত এর সূচনা দেখতে চাই। সত্য হলো, বিহার অমোচনীয় দারিদ্র্যসহ প্রচণ্ড অর্থনৈতিক সংকটে পতিত। এ অবস্থায় নতুন নালন্দা তাদের জন্য অনেক বেশি প্রয়োজনীয়। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে যদি তথ্যপ্রযুক্তি, পরিবেশবিদ্যা, ব্যবস্থাপনার মতো কার্যকর শিল্পগুলো শেখানো হয় তবে তা তাদের কাজে আসবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর বেছে নেওয়া হয়েছে কীভাবে? কোন ধরনের শিক্ষাগত যোগ্যতা আপনারা চাচ্ছিলেন?
পূর্ব এশিয়া সম্মেলনের সদস্য দেশগুলোর জন্য ভাইস-চ্যান্সেলর পদটি উন্মুক্ত থাকার কথা। তারপরও মেন্টর গ্রুপ প্রথম ভাইস-চ্যান্সেলর হিসেবে একজন ভারতীয়কেই প্রাধান্য দিয়েছে, যার কাজ করার ও প্রকল্পটিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বাস্তব অভিজ্ঞতা আছে। মেন্টর গ্রুপের পক্ষ থেকে সিলেকশন কমিটির কাছে যে চারটি চাওয়া ছিল তা হলো_ ১. প্রাতিষ্ঠানিক যোগ্যতা ২. প্রশাসনিক সক্ষমতা ৩. নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় প্রকল্প বিষয়ে আগ্রহ ও দায়বোধ ৪. নালন্দায় নতুন ক্যাম্পাসে অবস্থান ও এখানে একটি বুদ্ধিবৃত্তিক সমাজ গঠনের প্রত্যয় এবং বিহারের সমস্যা ও সম্ভাবনার সঙ্গে প্রত্যক্ষ যোগাযোগ।
সিলেকশন কমিটির সদস্যরা অন্তত ২০ জনের সঙ্গে কথা বলেছেন। পরামর্শ মোতাবেক সত্যিই যখন বিশ্ববিদ্যালয়টি কাজ শুরু করবে, তখন নালন্দায় থাকার সম্ভাব্যতা নিয়ে খোঁজখবর নিয়েছেন। সময়ে সময়ে যে কোনোভাবেই হোক ভারতীয় পত্রপত্রিকায় এ নিয়ে নানা খবর বেরিয়েছে। আবাসিক ভাইস-চ্যান্সেলরের বিষয়টি নিয়ে ধোঁয়াশা থাকলেও পত্রিকাগুলো নানাজনের কাছে অফার পেঁৗছানোর খবর দিয়েছে। সব তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে কমিটি ড. গোপা সাবহারওয়ালকে নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একই সঙ্গে নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে এমন তিন ব্যক্তির নাম ভারত সরকারের কাছে পাঠিয়েছে। ড. সাবহারওয়ালের প্রাতিষ্ঠানিক যোগ্যতা অসাধারণ, প্রাতিষ্ঠানিক বিষয়ে আমাদের পরামর্শক ছিলেন বিশ্ববিখ্যাত সমাজতাত্তি্বক আন্দ্রে বেতেই। তার প্রশাসনিক যোগ্যতাও সুগভীর। তিনি নালন্দা প্রকল্পের প্রতি দায়বদ্ধ। তিনি বিহারের সঙ্গে জড়িত। নালন্দায় অবস্থানের ব্যাপারে তার আগ্রহ অন্যদের থেকে তাকে এগিয়ে দিয়েছে। ভাইস-চ্যান্সেলর নির্বাচনে ক্ষমতার অধিকারী নালন্দা মেন্টর গ্রুপ ড. সাবহারওয়ালসহ তিনজনের নাম সরকারের কাছে প্রস্তাব করেছে। সরকার ওই পদের জন্য মনোনীত করে ড. সাবহারওয়ালকে প্রস্তাব পাঠিয়েছে। মেন্টর গ্রুপ খুশি যে প্রস্তাব পাওয়ার পর তিনি তা গ্রহণ করেছেন।
আমি বুঝতে পেরেছি, কিছু গণমাধ্যমে এ প্রশ্ন উঠেছে যে যিনি পূর্ণ অধ্যাপক নন তিনি কীভাবে ভাইস-চ্যান্সেলর পদের জন্য নির্বাচিত হন। আমার মনে হয়, পদ ও মর্যাদার দ্বারা আচ্ছন্ন সমাজে কিছু মানুষ ব্যক্তিকে তার পদ ও সামাজিক অবস্থান দিয়েই বিচার করতে চান_ তার যোগ্যতা ও গুণ দিয়ে নয়।
ড. গোপা সাবহারওয়াল কি কাজ শুরু করেছেন? বৃহৎ এই প্রকল্প বাস্তবায়িত করতে তিনি কী উদ্যোগ নিচ্ছেন?
বিহার সরকারের সহায়তায় ড. সাবহারওয়াল ইতিমধ্যে একটি ক্যাম্পাস স্থাপন করেছেন। আইনগত, প্রশাসনিক ও প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থাপনার পরিকল্পনাও এগিয়ে নিচ্ছেন। প্রথম দুটি বিভাগ হবে পরিবেশবিদ্যা ও ইতিহাসবিদ্যাকেন্দ্রিক, এরপরই হবে তথ্যপ্রযুক্তি ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ। এই বিভাগগুলো চালুর কাজ ইতিমধ্যে অনেক এগিয়েছে। তার নেতৃত্বে সিঙ্গাপুরের নালন্দা-শ্রীবিজয় সেন্টার, থাইল্যান্ডের চুলালঙকর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে পারস্পরিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়েছে। প্রফেসর ওয়াঙ বাঙওয়েই-এর মাধ্যমে চীনের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ইনফরমাল সম্পর্কও স্থাপিত হয়েছে। প্রফেসর ওয়াঙ নালন্দা পরিকল্পনার সঙ্গে জড়িত, মেন্টর গ্রুপের অন্যতম সক্রিয় সদস্য। কোরিয়া, জাপান ও আমেরিকার নেতৃস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গেও পারস্পরিক অংশীদারিত্বমূলক সহযোগিতার পথ খুলবে। এই সম্ভাবনাগুলোর অনুসন্ধান এখনও চলছে। বিহার সরকার বিশ্ববিদ্যালয়কে যে জমি দিয়েছে তা দেখভাল করার সঙ্গে সঙ্গে ক্যাম্পাস ও ভবনের স্থাপত্য-পরিকল্পনা এখন জোরেশোরে শুরু হয়েছে।
দুর্ভাগ্যজনকভাবে ড. সাবহারওয়াল এখনও প্রকৃত ভাইস-চ্যান্সেলর না হয়ে মনোনীত ভাইস-চ্যান্সেলর রয়ে গেছেন। এর পেছনে ভারত সরকারের প্রশাসনিক দীর্ঘসূত্রতাই দায়ী। এটি না হলে তিনি আরও দক্ষতার সঙ্গে তার দায়িত্ব পালন করতে পারতেন। নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় বোর্ড আশা করে শিগগির এই দীর্ঘসূত্রতার অবসান ঘটবে। তাতে কাজে গতি আসবে। মেন্টর গ্রুপের পরামর্শ মোতাবেক গত নভেম্বরে নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাস হয়েছে।
অর্থনৈতিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়টির লাভজনক হওয়ার সম্ভাবনা কতটুকু?
এ মুহূর্তে পরিকল্পনা কমিশনের মাধ্যমে ভারত সরকারই সব ব্যয়ভার বহন করছে। সরকার প্রশাসনিক জটিলতাগুলো দূর করার চেষ্টাও করছে। বাইরে থেকে অনুদানের প্রতিশ্রুতি আছে। চীন, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, লাওসসহ বিভিন্ন দেশের সরকার ও বেসরকারি খাত থেকে সহায়তা মিলবে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনৈতিক ভিত্তি তৈরি করতে আরও বহু পথ পাড়ি দিতে হবে।
বৈশ্বিকভাবে উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রে নালন্দার ভূমিকা কী হবে?
আন্তঃএশীয় সহযোগিতা ও জ্ঞান অর্জনে পুরাতন নালন্দার একটি বিশেষ ভূমিকা ছিল। এখানকার শিক্ষা কার্যক্রম ও গবেষণা শুধু ধর্মশিক্ষার সঙ্গেই জড়িত ছিল না, ব্যবহারিক জ্ঞান ও প্রায়োগিক বিজ্ঞানের সঙ্গেও এর সম্পর্ক ছিল। সে সময়কার শিল্পবোধের প্রতিফলন ছিল এর কার্যক্রমে। নতুন নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় একই দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সাম্প্রতিক শিক্ষাঙ্গন হিসেবে গড়ে উঠবে। আজকের সাম্প্রতিক বিষয় পরিবেশ সমস্যা ও তথ্যপ্রযুক্তি। এই ক্ষেত্রগুলোতে আন্তঃএশীয় সহযোগিতার প্রয়োজন রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে বিষয়গুলোতে সহযোগিতা বাড়বে। বিশ্বের বুদ্ধিবৃত্তিক ক্ষেত্রে পশ্চিমা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিশেষ অবদান আছে, বৈশ্বিক জ্ঞানক্ষেত্র তৈরিতে তারা বিশেষ ভূমিকা রেখেছে। কিন্তু মনে রাখার মতো বিষয় হলো, পশ্চিমের প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হওয়ার ৭শ' বছর আগে নালন্দা স্থাপিত হয়েছিল। এটি ছিল ইউরোপের বোলঙনা বিশ্ববিদ্যালয়। নালন্দা তখনই এটি পুরো এশিয়ার মধ্যে একটি যোগাযোগ ব্যবস্থা তৈরি করতে পেরেছিল। প্রাতিষ্ঠানিক যোগ্যতা অর্জনের সঙ্গে সঙ্গে একই ধরনের যোগাযোগ নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রেও হবে।
বিহারের জন্য এ বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্ব কী?
প্রায় এক হাজার বছর ধরে বিহার ছিল ভারতীয় সভ্যতার কেন্দ্র। এটি পাটনা বা পাটালিপুত্র থেকে শুরু হয়েছিল। এখানেই প্রথম সর্বভারতীয় সাম্রাজ্যের কেন্দ্র স্থাপিত হয়েছিল। বিহারেই প্রথম বৌদ্ধ পণ্ডিতদের সভায় নাগরিক আলোচনার মধ্য দিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের বিরল উদাহরণ তৈরি হয়েছিল। নাগরিক আলোচনাই গণতন্ত্রচর্চার কেন্দ্রীয় বিষয়। বিহারেই প্রথম জনস্বাস্থ্য সেবার ব্যবস্থা স্থাপিত হয়েছিল। যা নালন্দা পড়তে এসে ফা হিয়েন ও ইৎ সিঙ আমাদের জানিয়েছিলেন। পাটালিপুত্রের কুসুমপুরেই আদি ভারতীয় গণিতচর্চার শুরু হয়েছিল। বিহার আধুনিক ইতিহাসে পশ্চাৎপদ একটি জনপদ হিসেবে চিহ্নিত হতে পারে, কিন্তু এর রয়েছে উজ্জ্বল ইতিহাস। ইতিহাস এখানকার শিক্ষা কার্যক্রমকে প্রণোদনা দিতে পারে এবং তা দ্রুতলয়ে ঘটছেও।
নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় প্রকল্প গ্রহণের আগে বিহার সরকারের দৃষ্টিভঙ্গিতেও এমন প্রণোদনার ভাবনা ছিল। নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় এর ভিত্তিভূমির পুনর্জাগরণের ব্যাপারে পুরোপুরি দায়বদ্ধ। নালন্দা বিশুদ্ধ একাডেমিক শিক্ষার দিকে ঝুঁকে থাকবে না। তথ্যপ্রযুক্তি ও পরিবেশবিদ্যার মতো ব্যবহারিক বিষয়ের মধ্য দিয়ে বিহারের মানুষের জীবনযাত্রার দিক পরিবর্তনের চেষ্টাও থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিস্তারের সঙ্গে যেমন নালন্দার নিরাপদ অর্থনৈতিক ভিত্তি তৈরি হবে, তেমনি আন্তঃএশীয় সহযোগিতার মাধ্যমে সর্বভারতীয় বিস্তারও ঘটবে বিশ্ববিদ্যালয়টির। বিহার নালন্দাকে সমর্থন দিয়েছে, প্রত্যুত্তরে আমরা চাই নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় বিহারকে সমর্থন জোগাবে।
No comments:
Post a Comment