Friday, August 31, 2012

ইকুয়েডর কোথায়?

উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জকে আশ্রয় দিয়ে রীতিমতো সাড়া ফেলে দিয়েছে ইকুয়েডর। বিশ্ব এখন মোটামুটিভাবে যুক্তরাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত। এক মেরুর এই বিশ্বে বড় রাষ্ট্রগুলোও যুক্তরাষ্ট্রকে সমঝে চলে। গুরুতর ভিন্নমত হলে নানা ছল করে কৌশলে যুক্তরাষ্ট্রকে তা বোঝাবার ব্যবস্থা হয়। আলাপ-আলোচনা করে স্থিতাবস্থা বজায় রাখার চেষ্টা সবার। এমন অবস্থায় চীন নয়, ব্রাজিল নয়, ভারত নয়; ইউরোপের কোনো দেশ নয়_ যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম শত্রু জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জকে আশ্রয় দিল ইকুয়েডর। ইকুয়েডর চীনের মতো উদীয়মান অর্থনৈতিক ও সামরিক শক্তি নয়। ইউরোপের মতো উদারপন্থিও নয়। গণতান্ত্রিক ঐতিহ্যে যে খুব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার শখ দেশটির_ তাও নয়। তবু তিন কূল হারানো ডিজিটাল বিপ্লবীকে আশ্রয় দেওয়ার কাজটি তারাই করল। অ্যাসাঞ্জ ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক। অবস্থা বেগতিক দেখে অস্ট্রেলিয়া তাকে ত্যাজ্য করেছে। যুক্তরাজ্য প্রথমে কিছুটা উদারতা দেখালেও শেষ পর্যন্ত তাকে সুইডেনের কাছে হস্তান্তরের জন্য প্রস্তুত হচ্ছিল। সুইডেনে ধর্ষণের দায়ে তার বিচার হওয়ার কথা ছিল। অ্যাসাঞ্জ অবশ্য বলছেন, ধর্ষণের ঘটনা ঘটেনি। যা হওয়ার সমঝোতার ভিত্তিতে হয়েছিল। স্রেফ ষড়যন্ত্র করেই তাকে ফাঁসানো হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রেও নানা অভিযোগ শাসানো হচ্ছিল। এমন হতেই পারত যে, সুইডেন হয়ে তার গন্তব্য হতো যুক্তরাষ্ট্রের কারাগার। বাদ সাধল ইকুয়েডর। প্রশান্ত মহাসাগরের তীরে পেরু আর কলম্বিয়ার সীমান্তের দেশটি। এ দেশের মার্কিন বিরোধিতার ঐতিহ্য দীর্ঘ। এজন্য মার্কিনিরাও কম দায়ী নয়। দক্ষিণ আমেরিকার সামরিক স্বৈরাচারদের মাধ্যমে একের পর এক দেশে গণতান্ত্রিক সরকার উৎখাত করে নিজেদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। বহু বছর ধরে জনগণ সে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে লড়াই করে গণতান্ত্রিক সরকার এনেছে। আর এ সরকারগুলো হয়েছে স্বভাবের দিক থেকে পুরো মার্কিনবিরোধী। লাতিন আমেরিকায় বিভিন্ন দেশ মিলে তৈরি করেছে অ্যান্টি অ্যামেরিকান জোট_ অ্যালবা। এরা উঠতে-বসতে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে নানা কথা বলে। নামে অবশ্য এ দেশগুলোও আমেরিকা। কিন্তু কাজে অ্যান্টি আমেরিকা। তবে এই অ্যান্টি আমেরিকানদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের তৎপরতাও অব্যাহত। অ্যাসাঞ্জকে আশ্রয় দেওয়া নিয়েই সপ্তকাণ্ড রচিত হয়ে গেছে। গণতন্ত্র ও স্বাধীন মতপ্রকাশের বিশাল ধ্বজাধারী হলেও ইউরোপের দেশগুলো অ্যাসাঞ্জের ব্যাপারে চুপ। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের ভিন্নমতাবলম্বীদের আশ্রয় দেওয়ার ব্যাপারে যারা চ্যাম্পিয়ন; অ্যাসাঞ্জের ব্যাপারে তাদের কোনো বক্তব্যই নেই। আশ্রয় দেওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রও কম যায় না। একসময় ভিন্নমতাবলম্বী রাশিয়ানদের আশ্রয় দিয়েছে তারা প্রচুর। এখন চীনের ভিন্ন মতাবলম্বীদের নিয়ে তাদের আগ্রহের শেষ নেই। কিন্তু যেই তাদের এক ভিন্নমতাবলম্বীকে আশ্রয় দিতে গেল ইকুয়েডর, অমনি তার সমালোচনা শুরু হলো। বলা হলো, ন্যায়বিচারের পথে বাধা দেওয়া হলো। ইকুয়েডর স্রেফ পাগলামি করছে। ইকুয়েডরের লন্ডন দূতাবাসে অভিযান চালানোর ভয়ও দেখানো হয়েছে।
এখন বলা হচ্ছে, ইকুয়েডরের প্রেসিডেন্ট রাফায়েল কোরেয়া নির্বাচনে জয়ের জন্য অ্যাসাঞ্জ কার্ড ব্যবহার করতে চাইছেন। বিশ্বে একটা ভাবমূর্তি গড়ার চিন্তাও নাকি তার আছে। সব মিলিয়ে এক গুরুতর পরিস্থিতি। অ্যাসাঞ্জ প্রসঙ্গে ইকুয়েডরের পদক্ষেপকে কিন্তু বিশ্বের নাগরিকদের আলাদা করে ধন্যবাদ দিতেই হবে।
এই বিশ্বে মতাদর্শের লড়াইয়ে শেষ কথা বলে কিছু নেই। অ্যাসাঞ্জ যে শেষ পর্যন্ত একটি দেশে আশ্রয় পেয়েছেন_ এটি আশ্বস্ত হওয়ার মতো বিষয়। পৃথিবী অনন্ত সম্ভাবনাময়। এর আশ্রয়ও অনন্ত। রাজনীতির জটিল হিসাবনিকাশের বাইরে এই সত্যটাও জানা থাকা দরকার। এই সামান্য সত্যটা জানাবার জন্যও তো
ইকুয়েডরকে ধন্যবাদ জানানো
যেতে পারে।

Tuesday, August 14, 2012

তালা

একান্ত অসতর্ক ও ভুলোমন না হলে নিজের বাসায় তালা না লাগিয়ে পাশের বাসাতেও বেড়াতে যান না রাজধানীর অধিবাসীরা। ঈদে বা দীর্ঘ ছুটি কাটাতে দূরে গেলে তো কথাই নেই। একেকটি দরজায় সাধ্য ও সুবিধামতো নানাপ্রকার তালা দেওয়া হয়। তালা দেওয়ার আগে ঘরের দরজা-জানালা সব বন্ধ করে চলে ঘরকে রীতিমতো বেহুলার বাসরঘর বানানোর আয়োজন। দরজায় একাধিক ব্র্যান্ডের হরেক রকম তালা লাগিয়েও শান্তি নেই। যদি জানা যায়, আশপাশের বাসার কেউ ছুটি কাটাতে গ্রামে যাচ্ছেন না তবে তার কাছে অনুরোধ থাকে_ ভাই কি আপা, একটু চোখকান খোলা রাখবেন। বাসার দারোয়ানকে বাড়তি বকশিশ ধরিয়ে একটু নিয়মিত চোখ রাখার অনুরোধও করা হয়। তবুও কাজ হয় না। চোর-ডাকাতদের রোধ করার সাধ্য কার? ওনারা গ্রিল কেটে বাসায় ঢুকতে পারেন যেমন, তেমনি তালা ভাঙতেও সময় লাগে না। তাই যত তালাই লাগানো হোক, বাসা ছাড়তে গেলেই মনটা একটু খচখচ করবেই। তালা লাগানোর পর এ শহরে কার এমন বুকের পাটা যে, তিনি নিশ্চিন্তে থাকেন? হ্যাঁ, যার নিরাপত্তার দায়িত্ব রাষ্ট্রের, পুলিশ প্রহরায় যার বাসা সুরক্ষিত, তিনি ঘর খোলা রাখলেও আপত্তির কিছু নেই। কিন্তু বাদবাকি সবাই তালাঅন্তপ্রাণ। তালাময় জীবনে অভ্যস্ত এই নাগরিকদের যদি কেউ তালা লাগানোর অনুরোধ জানান, তবে তেলে-বেগুনে জ্বলে ওঠাই স্বাভাবিক। আমাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যেভাবে তালা লাগিয়ে নিশ্চিন্তে গ্রামে যাওয়ার পরামর্শ দিলেন নগরবাসীকে, তা তিনি করতেই পারেন। সবাই ঘর খুলে রেখে যাবে চোরদের সুবিধা করে দেওয়ার জন্য আর ফিরে এসে সরকারের দোষ দেবে_ তা তো হতে পারে না। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে, চুরি-ডাকাতি-ছিনতাই-খুনোখুনি নেই বললেই চলে। এ অবস্থায় কেউ যদি নিজের ইচ্ছায় বিপদে পড়তে না চায় তবে কেউ বিপদ ঘটাতে আসবে কেন? মন্ত্রীর দিক থেকে তাই তালা লাগানোর পরামর্শে কোনো ভুল নেই। কিন্তু প্রশ্ন হলো, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির যথাযথ খবর তিনি জানেন কিনা? খুন-খারাবি, চুরি-ডাকাতি, ছিনতাই ইত্যাদি অপরাধের বাড়বাড়ন্তের খবর জানতে অপরাধ বিশেষজ্ঞদের শরণাপন্ন হওয়ার দরকার পড়ে না। দৈনিক পত্রিকাগুলোতে চোখ বোলালেই হয়। সাধারণ মানুষ তো ভুক্তভোগী, পরিস্থিতির শিকার। তারা যখন দেখছে, যে বিষয়ের মন্ত্রী তিনি সে বিষয়েই বেখবর শুধু নন, উল্টো খবর দিচ্ছেন; তখন তারা তার ভালো কথাকেও ইতিবাচকভাবে নিতে পারছে না। ফলে যা হওয়ার তা-ই হচ্ছে। তালা প্রসঙ্গ নিয়ে বিস্তর কথা হচ্ছে। মেঠো আড্ডা, ভার্চুয়াল স্পেস, মিডিয়ায় কথা প্রসঙ্গে তালা প্রসঙ্গ উঠছে। কেউ রুষ্ট, কেউ দুষ্ট। মন্ত্রীর কথায় ক্ষোভ প্রকাশ করে অনেকে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নের দাবি জানাচ্ছেন। কেউ কেউ আবার এ নিয়ে নানা পরিহাস করছেন। অতীত-বর্তমানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীদের নিয়ে নানা কথা হচ্ছে। তালা নিয়ে বিস্তর তত্ত্বতালাশ চলছে। সাতক্ষীরার তালা থেকে শুরু করে মনের তালা পর্যন্ত নানা কথা হচ্ছে। মন্ত্রীর বেফাঁস মন্তব্য নিয়ে এই যে নানামুখী কথাবার্তা, এতে কিন্তু সাধারণের মনোভাব কিছুটা বোঝা যাচ্ছে। সে মনোভাব বুঝে নিয়ে সঠিক পদক্ষেপ নেওয়াটা সরকারের কাজ। কিন্তু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীই যদি মনে করেন, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি একেবারে সন্তোষজনক, তবে পরিস্থিতির উন্নতির জন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আদেশ-নির্দেশ কে দেবেন? এত বড় শহর, এত মানুষ, এত ঘরবাড়ি, এত চোর-ডাকাত_ এই শহরের নিরাপত্তার জন্য ২ হাজার র‌্যাব সদস্য যে যথেষ্ট নয়, তা তো সবার জানা। তালা লাগালেই সমাধান নিশ্চিত হবে না। তাই তালা লাগানোর কথাটা বাড়তি। মন্ত্রীর এই বাড়তি কথায় রুষ্ট হয়ে তাই কেউ কেউ বলেই ফেলছেন_ মাননীয় মন্ত্রী, কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা দেবেন না। আমরা তালা লাগাই। আপনার কথা মনে রেখে এবার বেশি করে তালা লাগাব। আপনি এবার মুখে তালা লাগান।

Wednesday, August 8, 2012

তরুণরা আসলে কী চায়

সারাবিশ্বেই রাজনীতিক, নীতিনির্ধারক ও বিশ্লেষকদের কাছে এটি বড় এক প্রশ্ন যে, তরুণরা আসলে কী চায়? প্রশ্নটি আগেও কমবেশি ছিল। কিন্তু এখন বোধহয় আগের যে কোনো সময়ের থেকে বেশি। প্রশ্নটা যে বেশি বেশি করে উঠছে, তার প্রেক্ষাপট কী? একটা অনুমান করা যেতে পারে। দু'চার দশক আগেও প্রজন্ম ব্যবধান বা জেনারেশন গ্যাপ ব্যাপারটি প্রজন্মগুলোর মধ্যে গুরুতর বিচ্ছিন্নতা তৈরি করেনি। পুরনো প্রজন্মগুলোর পক্ষে নতুন প্রজন্মগুলোর চিন্তার গতিপ্রকৃতি বুঝে ওঠা খুব কঠিন ছিল; কিন্তু সেটি একেবারে দুর্বোধ্য হয়ে ওঠেনি। এখন প্রজন্ম ব্যবধান গুরুতর সমস্যা। রাজনীতির নীতিনির্ধারকদের পুরনো প্রজন্ম তো বটেই, পিঠাপিঠি দুই প্রজন্মের মানুষের পরস্পরকে বুঝে ওঠার প্রক্রিয়াও ক্রমে কঠিন হয়ে পড়ছে। পরস্পরের প্রতি মনোযোগ কমেছে কি? হতে পারে। চিন্তাচর্চার ক্ষেত্রে বড় কোনো প্রভাবক তৈরি হয়েছে কি? অবশ্যই। এই প্রভাবকের নাম তথ্যপ্রযুক্তি। ইন্টারনেট নীরবে-নিভৃতে নতুন প্রজন্মের ভাষাভঙ্গি ও জীবনরীতিকে যেভাবে বদলে দিয়েছে অনেক বড় বড় আবিষ্কার ও উদ্ভাবনও তা অতীতে পারেনি। যারা ছোটবেলা থেকে ই-যোগাযোগের মধ্যে নেই আর যারা আছে তাদের চিন্তার ভঙ্গি, মনোজগতের আদলের মধ্যে পার্থক্য বিশাল। বছর তিনেক আগে আরব বিশ্বের তরুণদের নিয়ে একটি লেখা পড়ছিলাম পশ্চিমা কোনো সংবাদপত্রে। তাতে লেখা হয়েছিল, ইন্টারনেট আরব বিশ্বের তরুণদের পরিবর্তিত করে ফেলছে। তারা কথা বলছে শত্রুদের সঙ্গে। মানে সেখানকার পুরনো প্রজন্ম যাদের শত্রুজ্ঞান করে মিশত না_ সেই শত্রুদের সঙ্গে মিশছে তরুণরা। মিশে মিশে তরুণরা গণতন্ত্র, স্বাধীনতা ও পরিবর্তন শিখেছে। এই মেশামেশির ফল তো আমরা দেখলাম। আরব বসন্ত। পরিবর্তনের যে ডাক তরুণরা দিয়েছে তাতে পুরো বিশ্ব কেঁপে উঠেছে। কিন্তু পরিবর্তন কি হয়েছে? আরব বসন্ত নিয়ে এখন ফুটবল খেলছে সামরিক জেনারেল আর ইসলামপন্থিরা। অনেক তরুণের কাছে পরিবর্তন হয়তো এখন একটা ইলিউশনই। তবে এই জাগরণে বোঝা গেছে, পরিবর্তন একটা এক্সপ্রেশন তরুণদের। বিশ্বে অনেক রাজনীতিকই তরুণদের এ এক্সপ্রেশনের কথা জানেন। গত মার্কিন নির্বাচনে বারাক ওবামা পরিবর্তনের ডাক দিয়ে কেমন সাড়া ফেলেছেন সেটি মনে আছে। কিন্তু প্রত্যাশিত পরিবর্তন আসেনি সেখানেও। ফলে অনেক মার্কিনির কাছেও পরিবর্তন মানে এখন হয়তো ইলিউশনই। বাংলাদেশেও পরিবর্তনের ডাক এসেছিল। অনেকে বলেন পরিবর্তন নয়, এখানে যা হয়েছে তা পুরাতনের প্রত্যাবর্তন। তরুণরা পরিবর্তন চায়, কিন্তু পথে নামলে তা হচ্ছে না। ভোট দিলেও তা হচ্ছে না। তবে কি তারা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়বে? আর পরিবর্তন চায়টা কোথায়? যতটুকু মনে হয় তাতে অস্ত্র হাতে নিয়ে পরিবর্তনের সংগ্রামে নামবার মতো মানসিকতা তরুণদের মধ্যে নেই। নিদেনপক্ষে একটা দীর্ঘমেয়াদি রাজনৈতিক প্রক্রিয়াতেও তাদের মন বসবে বলে মনে হয় না। স্বল্পমেয়াদে মাঠে নেমে একটা হেস্তনেস্ত করার মনোভাব আছে। পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে তারা কী চায়? শ্রমিক শ্রেণীর মুক্তি? সমাজতন্ত্র? ধর্মরাষ্ট্র? এসব কিছুই না। তরুণরা যা চায় ভদ্রভাষায় বলতে গেলে তা হলো_ স্বাধীনতা, মুক্তি, গণতন্ত্র। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের আদলে জীবনযাপনের নিশ্চয়তা। ভারতের জনপ্রিয় লেখক চেতন ভগতের ভাষায় বলতে গেলে, নোকরি, ছুকরি আর সামাজিক অবস্থান। চেতন ভগতের উপন্যাস ফাইভ পয়েন্ট সামওয়ান অবলম্বনে নির্মিত হিন্দি সিনেমা থ্রি ইডিয়টসের কারণে তিনি তরুণদের মধ্যে সুপরিচিত। তিনি তরুণদের মুখপাত্র। তরুণরা কী চায় সে প্রশ্নের জবাবে তিনি এ জবাবই দিয়েছেন। মনে হতে পারে, খুব অসঙ্গত জবাব। তাছাড়া তরুণীদের কথা তার বিবেচনায় এলো না। কিন্তু সত্য হয়তো এটাই। নিয়মতান্ত্রিক গণতন্ত্রের মধ্যে তারা চায় চাকরি, সঙ্গিনী ও সামাজিক মর্যাদা। সরকারের কাজ সেসব নিশ্চিত করা। এ জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করা। রাজনৈতিক ক্ষমতায় যদি তরুণরা বাগড়া না দিতে আসে তবে এটুকু চাওয়া তো সরকারগুলো সানন্দে পূরণ করতে চাইতে পারে। কিন্তু পারছে কি? বাংলাদেশে যদি তরুণরা বলে, আমরা শুধু চাকরি, সঙ্গী-সঙ্গিনী আর সামাজিক মর্যাদা চাই। তবে সেটুকু পূরণের আন্তরিক চেষ্টা কি কেউ করবে?